সংবিধানে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্তির দাবি
Published : ১৮:৪৩, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
দেশের নাগরিকদের বিভিন্ন তথ্য অনলাইনে সংরক্ষিত থাকলেও তথ্যের সুরক্ষা লঙ্ঘিত হচ্ছে, চুরির ঘটনা ঘটছে। এর ফলে ইন্টারনেটের ব্যবহার ও ইন্টারনেট অধিকার সম্পর্কে নাগরিকেরা বাধার মুখে পড়ছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের ৪৩(খ) ধারা সংশোধন করে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত- সংবিধানে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার ও ডেটা সুরক্ষা অন্তর্ভুক্তি শীর্ষক এক সভায় এ দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন আয়োজিত এ সেমিনারে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (আইআইজিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, বর্তমানে সবকিছুই ইন্টারনেট নির্ভর। রাষ্ট্রে নাগরিকদের যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম মৌলিক অধিকার তথা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেটের সহজ লভ্যতা ও ডিজিটাল যে বৈষম্য রয়েছে তা কমিয়ে আনতে হবে। সংবিধানের পঞ্চম মৌলিক অধিকার তথা স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আজকে ২০২৪ সালেও যদি আলোচনা করতে চাই সেখানেও ইন্টারনেটের কথা চলে আসবে। তিনি ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই সময়ে শুধু আমরা নই সারাবিশ্ব আক্রান্ত হলো। ইন্টারনেট ছিল আমাদের লাইফ লাইন। তখন ইন্টারনেটের বিকল্প কিছু ছিল না।
উদ্যোক্তা ফাহিম মাশরুর বলেন, রাষ্ট্রকে দায়বদ্ধ করতে হবে। ইন্টারনেটের দাম কমাতে হবে। নাগরিকের তথ্য সুরক্ষায় অযৌক্তিক নিয়মকানুন বাতিল করতে হবে।
আলোচনা সভায় এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, রাজনীতিবিদেরা ইন্টারনেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে এখানে গ্রাহকসেবা বলতে কিছু নেই। ইন্টারনেট ব্যবহারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে দেখতে হবে। এবারের আন্দোলন তো ইন্টারনেটের মাধ্যমেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধানের ৪৩(খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা দেওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতারক ও হ্যাকার চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে নাগরিকদের বিভিন্ন তথ্য। বেসরকারি বা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নাগরিকের অনলাইন তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় নাগরিকের তথ্যের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রকে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠান তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা তানভীর হাসান জোহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এমএএইচ