সোমবার; ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪; ৮ পৌষ ১৪৩১

স্টার্টআপনামা পর্ব-২

স্টার্টআপনামা পর্ব-২

-ইনফোটেক ইনসাইট রিপোর্ট

Published : ১৩:৪৫, ৯ জুলাই ২০২৪

স্টার্টআপ কীভাবে সফল হয়?

সফল হওয়ার কোনও শর্টকাট নেই। বেশিরভাগ স্টার্টআপই ব্যর্থ হয়, তবে সবকটি নয়। স্টার্টআপের সফলতার বিষয়টি কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরের ওপর নির্ভর করে। এগুলো হলো-

১. দলটি তাদের আইডিয়া নিয়ে খুব অনুরাগী কিনা?

অনুরাগী বলতে বুঝায় কোনও দল তাদের আইডিয়া নিয়ে সব ধরনের কাজ করতে প্রস্তুত কিনা। অসাধারণ কোনও আইডিয়াও ব্যর্থ হতে পারে কিংবা মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা নাও পেতে পারে, যদি দলটি সব ধরনের কাজ করতে প্রস্তুত না থাকে। বিশ্বে এমন উদাহরণ অগণিত।

২. প্রতিষ্ঠাতাদের ডোমেইন সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা আছে কিনা?

ধরুন, একটা জায়গায় আপনি যাবেন। অথচ সেখানকার কিছুই আপনি চেনেন না। এমন হলে সেই নতুন জায়গায় যাওয়ার পর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তৈরি হতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি। স্টার্টআপের বিষয়টিও এরকম। স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতাদের ডোমেইন সম্পর্কে জানতে হবে। কেউ কেউ আবার বলে থাকেন, যে জায়গাটিতে একজন বা একদল উদ্যোক্তা বিচরণ করবেন তাদের সবাইকে ওই জায়গার সবকিছু জানতে হবে।

৩. তারা যথেষ্ট সময় দিতে ইচ্ছুক কিনা?

স্টার্টআপের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠাতাদের পাশাপাশি কর্মীদের প্রচুর সময় দিতে হয়। তাদের কর্মঘণ্টা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে। মেটলাইফ এবং যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্সের ২০১৮ সালের এক গবেষণা বলছে, স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতারা দিনে ১৪ ঘণ্টারও বেশি সময় কাজ করেন। স্টার্টআপের সঙ্গে জড়িত পুরো দলটি যদি তাদের জেগে থাকা সময়ের (অর্থাৎ ঘুম বাদ দিয়ে বাকি সময়) পুরোটা এই আইডিয়ার পেছনে দিতে ইচ্ছুক না হন, তাহলে এটি টিকে থাকতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

৪. কেন এই আইডিয়া এবং কেন এখনই?

আইডিয়া থেকেই স্টার্টআপের জন্ম। সফল হতে হলে কোনও স্টার্টআপ চালুর আগে আইডিয়া সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। যেমন- এটা কী নতুন কোনও আইডিয়া? যদি নতুন হয়ে থাকে তাহলে অন্যরা কেন এটি নিয়ে এতদিন কাজ করেনি? যদি নতুন আইডিয়া না হয়ে থাকে তাহলে ঠিক কী কারণে অন্যদের চেয়ে আমরা এগিয়ে থাকব? কী এমন সুবিধা আমরা যুক্ত করব যার জন্য মানুষ আমাদের গ্রহণ করবে? এসব প্রশ্নের বাস্তবসম্মত এবং ইতিবাচক উত্তর পেলে স্টার্টআপে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

৫. মার্কেট কত বড়?

একটি স্টার্টআপের বাজার কতটুকু বড় তার ওপর নির্ভর করে ওই স্টার্টআপটির সম্ভাবনার মাত্রা। বাজার বড় হলে বড় বিনিয়োগকারী পাওয়া সহজ হয়। পক্ষান্তরে, বাজারের আকার ছোট হলে বড় বিনিয়োগকারীরা খুব একটা আগ্রহী হয় না। তাছাড়া ছোট বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

কোনও স্টার্টআপ যদি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ইতিবাচকভাবে দিতে পারে, তাহলে তারা হয়তো প্রাথমিক ধাপে টিকে থাকবে। উল্লেখ্য, মাত্র ১০ শতাংশ স্টার্টআপ প্রাথমিক ধাপ পার হতে পারে।

স্টার্টআপে বিনিয়োগ করবেন কীভাবে?

স্টার্টআপে বিনিয়োগ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। স্টার্টআপের প্রাথমিক ধাপে বিনিয়োগ করতে আপনাকে অবশ্যই একজন অ্যাক্রিডিটেড ইনভেস্টর হতে হবে। সহজ কথায় বলতে গেলে, আপনার বার্ষিক আয় অন্তত ২ লাখ ডলার হতে হবে কিংবা আপনার প্রধান আবাসস্থল বাদ দিয়ে নিট সম্পদের পরিমাণ হতে হবে কমপক্ষে ১০ লাখ ডলার।

উল্লিখিত সব শর্ত আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হলেও অন্য আরেকটি সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে কয়েকটি ফান্ডিং সাইটের সহায়তায় আপনি চাইলে স্টার্টআপে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এরকম দুটি সাইট হলো- উইফান্ডার এবং সিড-ইনভেস্ট। বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই সব ধরনের শর্ত এবং নীতি বুঝে নিতে হবে। তা নাহলে পরবর্তী সময়ে নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। ভালো বিনিয়োগকারীরা সবসময়ই খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করে তবেই বিনিয়োগ করেন। (চলবে...)

 

এমএএইচ

শেয়ার করুনঃ