২০২৩ অর্থবছরে শপআপের আয় ১ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা
Published : ১৩:২৪, ৩০ মে ২০২৪
অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে দেশের বিটুবি বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম শপআপ। গত অর্থবছরের তুলনায় এ বছর তাদের আয় ৫৫ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৫২৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এফএমসিজি ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন চাল, তেল, চিনি কেনার ক্ষেত্রে ভোক্তাদের ক্রয়ের ধরন ও আচরণে পরিবর্তন করতে পারা শপআপের এই প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ। শপআপের উন্নত ডেলিভারি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগত শক্তিশালী অবস্থানও এই প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে শপআপ বর্তমানে দেশের ৩.১ কোটি মানুষকে সেবা প্রদান করছে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো শপআপের সঙ্গে কাজ করছে। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে নিরবিচ্ছিন্ন ডেলিভারি সেবা প্রদান করছে। কোম্পানিটি দেশজুড়ে সেবা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালে শপআপ তাদের মাইক্রো-ফুলফিলমেন্ট হাব ২০ শতাংশ বাড়িয়ে ৪২৭টি করেছে।
বর্তমানে ব্যয় কমাতে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিলেও বিক্রি খরচ বেড়ে যাওয়ায় শপআপকে অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। ব্যবসার আকারের ওপর নির্ভর করে সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে চুক্তি করা, অপচয় কমাতে নিজস্ব সাপ্লাই চেইন প্রযুক্তি নির্মাণ করা, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট উন্নত করার মাধ্যমে বিগত বছরের মোট আয়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বিক্রয় খরচ কমাতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি।
যদিও ২০২৩ অর্থবছরে শপআপের লোকসান ধরা হয়েছে ৪৯ মিলিয়ন ডলার। তবে প্রকৃতপক্ষে ইএসওপি (এমপ্লয়ার স্টক ওনারশিপ প্ল্যান) ব্যয় বাদে এর প্রকৃত লোকসান আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কমেছে। সাধারণত স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ক্যারিয়ারের শুরুর বছরগুলোতে লোকসানের ভেতর দিয়ে যায়। কারণ নতুন বাজার খুঁজতে ও বাজারে তাদের পরিধি সম্প্রসারণ করতে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে হয়। এছাড়া প্রযুক্তি ও জনবলে বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যবসায়িক পরিচালনা ব্যয় শুরুতে কিছুটা বেশি থাকে। এতে সাময়িক লোকসান হলেও ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ীত্বের পথ মসৃণ হয়।
বর্তমানে শপআপ বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং সে অনুযায়ী কোম্পানিটি পিএটি (প্রফিট আফটার ট্যাক্স) হিসেবে পরের বছর লাভজনক অবস্থানে পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করছে। শপআপ তার প্রতিষ্ঠানের ব্যয় কমাতে ইতোমধ্যেই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। হাব নেটওয়ার্কের ধারাবাহিক সম্প্রসারণ, কার্যকর সাপ্লাই চেইনে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং আরও ভালো সাপ্লাইয়ার নেগোসিয়েশন আগামী অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় কমাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে শপআপ বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। বাজারে সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে কোম্পানিটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে তাদের ডিস্ট্রিবিউশন হাব নেটওয়ার্ক ৭০০-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে।
৬৯.৫ মিলিয়ন ডলারের নগদ পুঁজি নিয়ে শপআপ কৌশলগতভাবে উদীয়মান বিশ্বের জন্য বৃহত্তম বাণিজ্য মডেল তৈরির উদ্দেশ্যে কাজ করছে। বাজারে শক্তিশালী অবস্থানে থাকা শপআপ তার প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে, বাজারের পরিধি প্রসারিত করতে এবং দীর্ঘমেয়াদীভাবে লাভজনক হতে ভালো অবস্থানে রয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ও উদীয়মান বাজারগুলোতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচার করতে শপআপ তার ব্যবসায়িক মডেলটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং নতুন বাজার অন্বেষণ করছে।
এমএএইচ