সোমবার; ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪; ৮ পৌষ ১৪৩১

যে ৭ প্রযুক্তি কাঁপাবে ২০২৪ সাল

যে ৭ প্রযুক্তি কাঁপাবে ২০২৪ সাল

ফয়সাল ইসলাম

Published : ১৩:০৭, ২৪ জুন ২০২৪

প্রযুক্তি সবসময়ই এগোচ্ছে। যতোই দিন যাচ্ছে ততোই প্রযুক্তি মানব কেন্দ্রীক এবং ব্যবসা নির্ভর হচ্ছে যা ভবিষ্যৎ সফলতাকে অনেক দ্রুততরই করছে। প্রযুক্তির এই অগ্রগতি শুধু যে ডিজাইনেই অগ্রসর হচ্ছে তা নয় বরং দিনে দিনে তা মানুষের বুদ্ধিমত্তার কাছাকাছি চলে আসছে এবং মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মে অংশগ্রহণ করছে। আশা করা যাচ্ছে আগামীতে এসব প্রযুক্তি মানুষের সংস্পর্শে আরও অনেক বেশি সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে এবং এ বছরের প্রযুক্তির পটভূমিতে কেন্দ্রীয় অবস্থান থেকে নেতৃত্ব দেবে।

সামাজিক হ্যান্ডেলে চোখ পাতলে ২০২৪ সালের নেতৃস্থানীয় প্রযুক্তির কথাগুলো চোখের সামনে চলে আসে। হলো-

ডিজিটাল টুইন

ডিজিটাল টুইন বা ডিজিটাল রেপ্লিকা। এটি বিশেষ করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরে প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হিসেবে বেড়ে উঠছে। বাস্তবিক কোনও বস্তু, স্থান বা প্রক্রিয়ার এই ভার্চুয়াল রিপ্রেজেন্টেশন নিশ্চিত করছে নির্ভুলতা, সাশ্রয়ী এবং ভবিষ্যৎ বাণীমূলক ত্রুটি বিশ্লেষণ। শিল্পের ক্ষেত্রে এটি সিমুলেশন এবং নির্ভুল চেকিং নিশ্চিত করার মাধ্যমে একরকম বিবর্ততনই ঘটিয়ে ফেলতে যাচ্ছে। এছাড়া এটি সিস্টেমের অপটিমাল পারফরমেন্সও নিশ্চিত করে।

ব্লকচেইন

এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা বিশ্বাসের ভিত্তিকেই একরকম নাড়া দিয়ে ফেলেছে। ব্লকচেইন অনলাইন ট্রানজেকশানে কোনও কেন্দ্রীয় সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তাকে কমিয়ে ফেলেছে। এটি নতুন এটি ট্রানজেকশান পদ্ধতি গড়ে তুলছে এবং প্রক্রিয়াটিকে স্বয়ংক্রীয় করছে বিশেষত ডিজিটাল প্রোপার্টির ক্ষেত্রে। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এরমূল্য ১৭৬ বিলিয়ন ডলার পার হয়ে যাবে। এর ব্যবহার ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ফিন্যান্সকেও অতিক্রম করে বিভিন্ন সেক্টরে চলে গেছে।

আইওটি

ইন্টারনেট অব থিংস বা সংক্ষেপে আইওটি। এটি হাইপারকানেক্টেড বিশ্বকে ক্ষমতায়িত করছে। এরমধ্যে রয়েছে সেন্সর এবং সংযোগকারী ডিভাইস যা ডিজিটাল টুইন, মেটাভার্স এবং বুদ্ধিবৃত্তিক যন্ত্রপাতির ভিত্তি স্থাপন করছে। ২০২৪ সালে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের মূল উদ্দশ্য হলো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এবং অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে কমিউনিকেশন চ্যালেঞ্জকে অ্যড্রেস করা। যেহেতু আইওটি ডিভাইসগুলো বাড়ছে এবং বড় রকমের নেটওয়ার্ক তৈরি করছে তাই বড় আকারের ডেটা সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের মাধমে এগুলো নিরাপত্তা, কর্মদক্ষতা সিদ্ধান্ত গ্রহণকে আরও বেশি কার্যকর করে গড়ে তুলছে। পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংযোগে আইওটি আরও জটিল হয়ে উঠছে।

কোয়ান্টাম কম্পিউটিং

কোয়ান্টাম কম্পিউটিং একটি বৈপ্লবিক অগ্রগতি এনেছে। এটি কোয়ান্টাম ফেনোমেনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ফাইনান্সিয়াল রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পর্যন্ত সবকিছুরই গতি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৯ সালের মধ্যে এর রেভিনিউ ২.৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। কোয়ান্টাম কম্পিউটার আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রকে বড় রকমের পরিবর্তন করবে।

মেটাভার্স

মেটাভার্স হলো একটি ডিজিটাল ইউনিভার্স। ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির আলোচনায় এটিই এখন কেন্দ্রবিন্দু। আশা করা যাচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ এটি ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এটি সোশ্যাল প্রেজেন্স, রিমোট ওয়ার্ক, পেমেন্ট, হেলথ কেয়ার ও প্রোডাক্ট সেলের ক্ষেত্রে অনেক বড় সম্ভাবনা তৈরি করছে। শিল্পের ক্ষেত্রে টেকসই লক্ষমাত্রা অর্জনে মেটাভার্স আশার আলো দেখাচ্ছে।

সুপারঅ্যাপস

সুপারঅ্যাপসকে বলা হয় অ্যপ্লিকেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের একীভূত রূপ। একটিমাত্র অ্যাপ্লিকেশনে রয়েছে বহুবিধ টুল। একে আপডেট করা হচ্ছে চ্যাটবট, আইওটি প্রযুক্তিকে সাপোর্ট করার জন্য এবং মেটাভার্সের অভিজ্ঞতাকে আরও গভীর করার জন্য।

রোবোটিং  প্রসেস অটোমেশন

রোবোটিং  প্রসেস অটোমেশন, আরপিএ মেশিন লার্নিং এবং এআই’র মাঝে একটি যোগসূত্র তৈরি করছে। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াকে স্বয়ংক্রীয় করছে। ভুলকে কমিয়ে কর্মদক্ষতাকে বাড়িয়ে তুলছে। এটি কর্মীদের জন্য পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলো থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের সৃষ্টিশীল কাজে মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। এতে ব্যয় সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি লাভজনকও হচ্ছে।

সম্প্রতি আমরা প্রযুক্তিতে এআই -এর ব্যবহার এবং এর বিস্তৃতি দেখেছি। পাশাপাশি কোয়ান্টাম কম্পিউটিং -এর বিস্তার, মেটাভার্সের উত্থান এবং টেকসই ও সাইবারসিকিউরিটির উপর বিশেষ মনোযোগ দিতেও দেখেছি। প্রযুক্তির এই ট্রেন্ডগুলো আমাদের কাজ, বসবাস এবং পারস্পারিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ নতুন করে একটি আকৃতি দিতে যাচ্ছে। এসবই আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে বেশ ভালোভাবেই প্রভাবিত করতে পেরেছে।

 

এমএএইচ

শেয়ার করুনঃ