ভবিষ্যতের এআই : মাথার ভেতরেই থাকবে স্মার্টফোন
Published : ১৩:১৩, ১১ জুলাই ২০২৪
এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। কেউ বলছে এটি আশির্বাদ আবার অনেকেই বলছে এআই ভয়াবহ কোনও পরিণতি ডেকে আনবে। গুগলে এআই-বিষয়ক বর্তমান প্রধান গবেষক রে কার্জউইল প্রায় দুই দশক আগেই ‘দ্য সিঙ্গুলারিটি ইজ নিয়ার’ নামের এআই নিয়ে একটি বই লেখেন। বইতে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন ২০৪৫ সালের দিকে আমরা কম্পিউটারের সঙ্গে একত্র হয়ে অতিমানব হয়ে উঠবো। ৭৬ বছর বয়সী এই গবেষকের বইটির নতুন একটি পর্ব বা সিকুয়েল আসছে যার নাম ‘দ্য সিঙ্গুলারিটি ইজ নিয়ারার।’
বিষয় হলো কার্জউইল তার প্রথম বইতে যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা অনেকটা অবাস্তব মনে হলেও দিন যতোই গড়াচ্ছে ততোই যেনো তা বাস্তব হয়ে উঠছে। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাজ্যের দ্য অবজারভারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার লেখক জীবন, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন।
প্রশ্ন- আপনার ২০২৯ সাল ও ২০৪৫ সালের পূর্বাভাসে কোনও পরিবর্তন তো আসেনি?
-আমি ধারাবাহিক থেকেছি। ২০২৯ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইনটেলিজেন্সের (এজিআই) ও মানুষের স্তরের বুদ্ধিমত্তা এই দুই ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য থাকবে। মানুষের স্তরের বুদ্ধিমত্তা অর্জনের সাধারণ অর্থ হচ্ছে, যেকোনও একটি ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবচেয়ে দক্ষতাসম্পন্ন মানুষের ক্ষমতায় পৌঁছেছে এবং ২০২৯ সাল নাগাদ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানুষের সক্ষমতা অর্জন করবে।
প্রশ্ন- কিন্তু আপনি যে সময়ের কথা বলছেন, তা কেন বিশ্বাস করবো আমরা?
-আজকের এই নিয়ে একমাত্র আমিই পূর্বাভাস দিয়েছিলাম। তখন ধারণা ছিল এমন সক্ষমতা অর্জন করতে ১০০ বছর বা তার বেশি সময় লাগবে। কিন্তু আমি মাত্র ৩০ বছরের কথা বলেছিলাম। প্রতি ১৫ মাসেই আমরা মূল্য-কর্মক্ষমতা দ্বিগুণ করছি।
প্রশ্ন- সিঙ্গুলারিটি আসলে কী?
সিঙ্গুলারিটি একধরনের রূপক, যা পদার্থবিদ্যা থেকে নেওয়া। আমাদের মস্তিষ্ক যখন ক্লাউডের সঙ্গে যুক্ত হলে সিঙ্গুলারিটি তৈরি হয়। আমাদের প্রাকৃতিক বুদ্ধিমত্তা ও আমাদের সাইবারনেটিক বুদ্ধিমত্তার যে সংমিশ্রণ হতে যাচ্ছে তা মিলে একটা এককে পরিণত হবে।
প্রশ্ন- এটা কেমন হবে, তা কল্পনা করা কঠিন; কিন্তু এটা খুব আকর্ষণীয় হবে, তা মনে হচ্ছে না।
মনে করুন, আপনার স্মার্টফোনটি আপনার হাতে না থেকে মাথার মধ্যে রয়েছে। আপনা মাথায় কোনও প্রশ্ন এলে তা মাথার ভেতর থেকেই ক্লাউডে গিয়ে উত্তর খুঁজে দেবে। এটা কখন হয়ে যাবে, তা বুঝতেও পারবেন না। তখন মানুষের আর ফোনের দরকার পড়বে না।
এআই এর ঝুঁকির বিষয়ে কার্জউইল বলেন, বিপদের বিষয় নিয়ে একটি অধ্যায় আমার বইয়ে আছে। সামনে এগোনোর সেরা উপায় বের করার চেষ্টা করেছি। এজন্য আমি আসিলোমার এআই প্রিন্সিপাল (এআই উন্নয়নের নীতিমালা) তৈরি করেছি। ভবিষ্যতের ব্যাপারে তিনি বলেন, মানুষ এআই পরস্পর বিরোধী হবে না বরং এআই থাকবে আমাদের ভেতরে। ভবিষ্যৎ হবে বেশ চমৎকার বলেই তিনি মন্তব্য করেন।
এমএএইচ