এআই দিয়ে বানানো ছবি চেনার উপায়
Published : ১৭:২৭, ২৪ আগস্ট ২০২৪
প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এর অনেক খারাপ দিকও মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। আজকাল এআই দিয়ে সহজেই তৈরি করা যায় বিভিন্ন রকমের ছবি, ডিপফেক ভিডিও ইত্যাদি। আর এগুলো ব্যবহারের মাত্রা বেড়ে যায় বিশেষ করে বড় কোনও ঘটনা যখন বিশ্বব্যাপী বা দেশব্যাপী চলতে থাকে তখন। এতে মানুষ খুব সহজে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। সম্প্রতি বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক এবং বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও এআই দিয়ে বানানো ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে রয়েছে। প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা এসব গুজব যেন আমাদের প্রভাবিত করতে না পারে এজন্য এগুলোকে চিনে রাখার প্রাথমিক কিছু ধারণা থাকা এখন আমাদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। কোনও ছবি কৃত্রিম উপায়ে তৈরি কি না তা বোঝার জন্য আমাদের যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে তার মধ্যে রয়েছে-
১. ছবিটি ভালোভাবে দেখতে হবে
এআই অনেক শক্তিশালী হলেও তা মানুষের অবয়ব নিখুঁত ভাবে তৈরি করতে পারে না এখনও। এসব ছবি বানানো হয় সাধারণত মাইক্রোসফটস এআই ইমেজ জেনারেটর, মিডজার্নি, ডিপএআই ইত্যাদি সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এসব প্রযুক্তি দিয়ে বানানো ছবিতে মানুষের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেমন হাত, পা আঙ্গুল ইত্যাদি এসবের আকৃতির ভারসাম্য পুরোপুরি ঠিক থাকে না। এসব অঙ্গের গঠন এবং অবস্থানও সঠিকভাবে বিন্যাস করা থাকে না। একটু কমবেশি থেকেই যায়। অনেক সময় হাত ও পায়ের আঙ্গুল পাঁচটার জায়গায় ছয়টা দেখা যায়। কখনও সেগুলো একটু বাঁকা বাঁকা ভাব থাকে আবার দৈর্ঘ্যও একটু অস্বাভাবিক খাকে।
নাকের গঠনে বিশেষ করে নারীদের নাক তুলনামূলক বেশি লম্বা থাকে এসব ছবিতে। চোয়ালের হাড় কিছুটা উঁচু থাকে কখনও কখনও। চোখে চশমা পরানো থাকলে সেটার প্রতিবিম্ব ঠিকভাবে থাকে না। কোনও প্রতিবিম্বই ঠিকভাবে থাকে না। সাধারণত মানুষ বা অন্যকোনো বস্তুর ছায়া থাকে না এসব ছবিতে।
ছবিতে লেখা থাকলে সেখানেও ঝামেলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এআই দিয়ে তৈরি ছবিতে ব্যক্তির চেহারায় শার্পনেসের তুলনায় গ্লো বেশি থাকে। চেহারার ভেতরে অনেক সময় কার্টুনভাব থাকে। চোখের মণির বিস্তারিত থাকে না।
আবার টেকনিক্যাল দিক দিয়ে দেখতে গেলে ক্যামেরায় তোলা ছবিতে অনেক রকমের তথ্য থাকে যেমন, কোন ক্যামেরা দিয়ে তোলা, কবে বা কখন তোলা, কে তুলেছে, ছবি তোলার সময় ইত্যাদি। কিন্তু এআই দিয়ে বানানো ছবিতে এসব তথ্য থাকে না।
২. অনেক নিখুঁত ছবি হয়
এআই দিয়ে তৈরি ছবি তুলনামূলক বেশ নিখুঁত একটা ভাব থাকে। দেখে মনে হবে ঠিক যেমনটি চাওয়া হয়েছিল ঠিক তেমনই হয়েছে। ব্যাপারটা এরকম যে হাত দিয়ে বানানো পণ্যের তুলনায় কারখানায় বানানো পণ্যের ফিনিশিং যেমন অনেক নিখুঁত হয় ঠিক তেমন। এটাকে ‘এয়ারব্রাশড’ লুকও বলা যেতে পারে। কিন্তু ছবির আশেপাশে সার্বিক এলিমেন্টে ঘাপলা থাকবে। দেখলে মনে হতে থাকবে কোথাও একটা সমস্যা আছে।
৩. রিভার্স ইমেজ সার্চ
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ছবিটি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে তা সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়। এই কাজে গুগল লেন্স ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া ইয়ানডেক্স-সহ নেটে ডিপফেক বা প্ল্যাজিয়ারিজম সার্চের অনেক টুল রয়েছে। এসব ব্যবহার করেও ছবির সূত্র বা উৎস সহজেই খুঁজে বের করে ফেলা যায়। এআই দিয়ে বানানো ছবি সাধারণত ভালো ওয়েব সাইট বা নিউজ মিডিয়া ব্যবহার করে না। বা করলেও সেটার নোট দিয়ে দেবে। সার্চ করে তালিকা দেখলেই বোঝা যাবে কোন ধরনের সাইট সেই ছবিটি ব্যবহার করেছে। সেখান থেকেও ছবিটি সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
এমএএইচ